ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় সাংবাদিক সেকেন্দার আলমের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার দায়েরের পর পরই অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি লাভলু সিকদার, নজরুল খান, কামরুল খান ও জীবন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১২ মে) দুপুরে আটককৃতদের ফরিদপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এর আগে মঙ্গলবার (১১ মে) দিবাগত রাতে আহত সাংবাদিক সেকেন্দার আলম নিজেই বাদি হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনা আরো ১০-১২ জনকে আসামি করে আলফাডাঙ্গা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর-০৪।
মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিরা হচ্ছে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোনায়েম খান, গোপালপুর গ্রামের আ. রউফ সিকদারের ছেলে লাভলু সিকদার, বাহাদুর খানের ছেলে আরব আলী খান (পিরু), আমজাদ খানের ছেলে নুর জালাল খান, মো. মোক্তার খানের ছেলে নজরুল খান, রহমান ঠাকুরের ছেলে কামরুল খান ও বাকাইল গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে জীবন বিশ্বাস।
বুধবার (১২ মে) ভোর রাতে এজাহারভুক্ত আসামি লাভলু সিকদার, নজরুল খান, কামরুল খান ও জীবন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে দপুরে ফরিদপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক সেকেন্দার আলম ইরি মৌসুমে ধান মাড়াই করার জন্য একটি পরিত্যক্ত জায়গায় মালিকদের সাথে আলোচনা করে চাতাল তৈরী করেন। কিন্তু স্থানীয় বিরোধের কারণে অভিযুক্ত আরব আলী খান চাতালে ধান মাড়াই করতে বাঁধা দেয় এবং বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে হত্যার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে গত ৬ মে রাত ৮টার দিকে সেকেন্দার আলম মোটরসাইকেল যোগে ইফতার শেষে পবনবেগ কবরস্থান নতুন মসজিদের নিকট তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে অভিযুক্তরা তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
হামলাকারীরা তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। এতে তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পথচারীরা দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ওই রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
বর্তমানে তিনি মাথার অপারেশন শেষে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, অভিযুক্ত মোনায়েম খান বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের আসামি না করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে তাঁকে সহ অন্য ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
আলফাডাঙ্গা থানার ওসি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পরপরই এজাহারভুক্ত ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সাংবাদিক সেকেন্দার আলম আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম শেখের ছেলে। তিনি আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক ভোরের পাতার উপজেলা প্রতিনিধি এবং সাপ্তাহিক ‘আমাদেও আলফাডাঙ্গা’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক।
Leave a Reply